নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হয়তো আপনারা অনেকে
ইচ্ছুক। নিউমোনিয়া এমন একটি রোগ যেটি শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি হয়ে থাকে এবং এটি
মারাত্মক একটি রোগ। আপনি যদি নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণগুলো না জেনে থাকেন তাহলে খুব
সহজেই জেনে নিতে পারবেন এই আর্টিকেলটি থেকে।
আমার প্রিয় পাঠক আমাদের নিউমোনিয়া রোগ হলে আমরা কিভাবে বুঝব এবং নিউমোনিয়া রোগ
থেকে কিভাবে রক্ষা পাব সে সকল বিষয়ে আলোচনা করব এই আর্টিকেলে। চলুন তাহলে আমরা
বিস্তারিত জেনে নেই নিউমোনিয়া রোগ হলে আমরা কিভাবে বুঝব এবং এই রোগ থেকে কিভাবে
রক্ষা পাবো।
পোস্ট সূচীপত্রঃ নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নাই। এবং এ
বিষয়গুলো আমরা অনেকেই এড়িয়ে যাই। নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ এটি বোঝা খুবই সহজ।
তবে আমরা যারা নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এবং কিভাবে বাঁচা যায় চলুন
জেনে নেই। নিউমোনিয়া হলে সাধারণত বোঝার উপায় হলঃ সর্দি কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট
এবং বুকে ব্যথা হলে বুঝতে পারব। এগুলো হল মারাত্মক নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ।
আরও পড়ুনঃ খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
এর ফলে কিন্তু আমরা সহজেই নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ বুঝতে পারবো এবং খুব সহজেই
চিকিৎসা নিতে পারব। কিন্তু নিউমোনিয়া রোগের প্রতিকার খুবই সহজ। নিউমোনিয়া রোগের
ভ্যাকসিন ও অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ রয়েছে। এবং শিশুদের ক্ষেত্রে মাতৃদুধ পান,
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, এবং বায়ু দূষণ থেকে দূরে রাখতে হবে। এভাবেও নিউমোনিয়া
রোগের প্রতিকার করা সম্ভব।
নিউমোনিয়া কি জনিত রোগ
নিউমোনিয়া কি জড়িত রোগ এটি হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। নিউমোনিয়া সাধারণত
আমাদের ফুসফুসের ইনফেকশন জনিত একটি রোগ। আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে গেলে আমাদের
ফুসফুসের ভেতরে অনেক বায়ুথলি রয়েছে। যার ফলে সেখানে বাতাস জমে এবং বের হয়। তবে
যখন নিউমোনিয়া হয় তখন আমাদের ফুসফুসে বায়ুথলিগুলো রক্তচাপ ও রক্ত জমে ব্লক করে
দেয়। যার ফলে আমাদের অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট হয় ও বুকে ব্যথা হয়।
এবং পাশাপাশি নিউমোনিয়া হলে জ্বর সর্দি কাশি এবং বুকে চাপা কষ্ট হবে। এগুলো হলে
আমরা বুঝতে পারবো আমাদের নিউমোনিয়া হয়েছে। এবং বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হলে তারা
সাধারণত আগের তুলনায় খাওয়া দাওয়া কম করে দেয় এবং জ্বর ঠান্ডা সর্দি কাশি
এগুলো লেগেই থাকে তবে নিউমোনিয়া রোগ একটি সংক্রমণ হোক। যার ফলে নিউমোনিয়া রোগের
আশেপাশে কেউ থাকলে তাদের হওয়া সম্ভাবনা অনেক বেশি।
নিউমোনিয়া কেন হয় জেনে নিন
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ জানার পাশাপাশি আমরা অনেকে হয়তো জানি না নিউমোনিয়া রোগ
কেন হয়। তবে আমাদেরকে সকলের জেনে রাখা উচিত শারীরিক জীবন সুস্থ রাখার জন্য।
শীতের আবহাওয়া আসলেই মানুষের রোগ ব্যাধি খুব বেশি হয়ে থাকে। এবং শীতকাল আসলে
শিশুদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ শীতকাল আসলে শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া রোগ
বেশি দেখা যায় এবং এটি বয়স্কদের ক্ষেত্রেও বেশি দেখা দেয়।
প্রিয় পাঠক শীতের আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ দেখা দেয়।
এবং এটি শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি বেশি জ্বর ঠান্ডা কাশি এগুলো হয়ে থাকে। পরবর্তীতে
শিশুদের শ্বাসকষ্ট এবং বুকে ব্যথা হয়। এবং এগুলো থেকেই নিউমোনিয়া রোগের রূপ
নেয়। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রেও তাদের খুব বেশি জ্বর হয়। এবং তাদেরও শ্বাসকষ্ট
বুকে ব্যথা এগুলো থেকে সাধারণত নিউমোনিয়া হয়ে থাকে। তবে শীতের আবহাওয়া আসলে
আমাদের সকলের নিজের সুস্থতা থাকার জন্য নিজের শরীরের যত্ন নেওয়া।
বড়দের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ
বড়দের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ সাধারণত একটু ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে নিউমোনিয়া
রোগের লক্ষণ হল জ্বর ,সর্দি ,কাশি ,ঠান্ডা এবং শ্বাসকষ্ট। তবে এগুলো দেখা দিলে
আপনারা খুব দ্রুত চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিবেন। তবে বড়দের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া
রোগ হলে একটু ভিন্ন হতে পারে। যেমন তাদের ঘন ঘন জ্বর আসবে। এবং শ্বাসকষ্ট হবে।
তবে এই শ্বাসকষ্ট অধিক মাত্রায় হতে পারে এবং অনেক সময় কাশির সাথে মুখ দিয়ে
রক্ত বাড়াতে পারে। এবং ঘন ঘন জ্বর আসবে।
তবে বড়দের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া হলে অধিক মাত্রায় শ্বাসকষ্ট দেখা দিবে এবং কাশি
হতে হতে হাঁপিয়ে উঠবে। এবং এর সাথে মাথা ব্যথা ও বমি বমি ভাব হতে পারে। এবং
বড়দের নিউমোনিয়া রোগ হলে শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে ব্যথা হয়। এ সকল লক্ষণ গুলো
দেখা দিলে আপনারা অতি দ্রুত চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিবেন। এবং আমাদের উচিত
ছোট-বড় কোন রোগকে অবহেলা না করা।
শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ
শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ আমরা কিভাবে বুঝব চলুন বিস্তারিত জেনে নেই।
শিশুদের সাধারণত নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ দেখা দিলে বুঝবেন যে শিশুদের ঘনঘন জ্বর
এবং সর্দি কাশি লেগে থাকে। এবং একটি শিশু আগের তুলনায় যেভাবে খাবার খেত সেই
তুলনায় খাবার খাওয়া কমিয়ে দিবে। তবে অনেক সময় এসবের লক্ষণ দেখা দিলেও
নিউমোনিয়া রোগ না হতেও পারে। তবে আমাদের সকলের উচিত এ সকল লক্ষণ গুলো দেখা দিলেও
অতি দ্রুত চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নেওয়া।
এবং আপনি একটি শিশুর নিউমোনিয়া রোগ হলে বুঝবেন যে শিশুটি সর্দি কাশির পাশাপাশি
শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। এ লক্ষণ দেখা দিলে আপনি অতি দ্রুত চিকিৎসকের
পরামর্শ নিয়ে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে তুলবেন। নিউমোনিয়া রোগের প্রতিকার করা যেমন
সহজ তেমনি কঠিন। আপনি যদি এভাবে পরামর্শ সঠিকভাবে দিতে না পারেন তাহলে শিশুটি
অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। শিশুদের নির্মাণে য়া রোগ হলে এটি অতি দ্রুত
চিকিৎসা দিন তাহলে আপনি শিশুটাকে সুস্থ করতে পারবেন।
নিউমোনিয়ার টিকা কখন দিতে হয় জেনে নিন
নিউমোনিয়ার টিকা কখন দিতে হয় এ সকল বিস্তারিত আপনাদেরকে জেনে রাখা খুবই
প্রয়োজন। এসকল নিউমোনিয়া থেকে বাঁচার জন্য নিউমোনিয়ার টিকা দিয়ে থাকে। অনেক
সময় আমাদের মাঝে যে সকল বয়স্ক মানুষগুলো রয়েছে এবং যাদের শরীর খুবই দুর্বল
তাদেরকেও এই টিকা দেয়া উচিত। নিমোনিয়া টিকা সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি
হল পূর ক শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ও ফ্লো সংক্রমণ।
সাধারণত নিউমোনিয়া রোগের টিকা শিশুদের জন্য ১৫ মাসের ভিতরে চারটি ডোজ দিয়ে
থাকে। এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৬৫ বছর পরে একটি ডোজ দিয়ে থাকে। নিউমোনিয়া রোগের
টিকা দিলে সাধারণত রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তবে এই নিউমোনিয়া রোগের
টিকা নিউমোনিয়া হওয়ার আগেই নেওয়া উচিত। এই টিকা নিউমোনিয়া রোগ থেকে দূরে রাখে
এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এজন্যই সকল শিশুকে নিউমোনিয়া
রোগের টিকা প্রদান করে থাকে।
নিউমোনিয়া হলে কি কি খাওয়া উচিত
নিউমোনিয়া রোগের প্রতিকার করার জন্য আমাদেরকে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
কারণ নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীদের শরীর দুর্বল হয়ে থাকে। এবং এ সকল দুর্বল
এর জন্য আমাদের পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। যাতে আমাদের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়াতে পারি। আর এ সকল পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত শিশুদেরকে
খাওয়ানো উচিত। যাতে এই খাবারের মাধ্যমে অতি দ্রুত নিউমোনিয়া রোগ থেকে সুস্থ হতে
পারে।
নিউমোনিয়া রোগীদের জন্য ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেতে হবে। যেমনঃ আনারস, পেঁপে ,
পেয়ার, আমলকি, কমলা । এবং আমাদেরকে সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। এবং আপনি চাইলে নরম
খাবার যেমন পাউরুটির কলা এবং স্যুপ বানিয়ে খেতে পারেন। তবে আপনার শরীরে পানি
শূন্যতা থাকলে নিয়মিত পরিমাণ করে পানি খেতে হবে যদি আপনার শরীরের পানি শূন্যতা
না থাকে। এবং আপনার শরীরের জন্য কঠিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, ডিম, দুধ এগুলো খেতে
হবে।
আমাদের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ হয়তো আমরা বুঝতে পেরেছি নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
সম্পর্কে বিস্তারিত। নিউমোনিয়া একটি প্রাণঘাতী রোগ। এ রোগ থেকে শিশু ও বয়স্কদের
খুবই সাবধানে থাকতে হবে। এবং উপরে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী অবলম্বন করলে তা আপনি
খুব সহজেই নিউমোনিয়া রোগের প্রতিকার করতে পারবেন। এবং ছোট বাচ্চাদেরকে তাদের ১৫
মাস বয়সে চারটি টিকা ডোজ দিয়ে দিতে হবে। যাতে তাদের শরীরে নিউমোনিয়া রোগের
লক্ষণ দেখা না দেয়।
প্রিয় পাঠক নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত এবং এই ধরনের
নতুন নতুন পোস্ট পাওয়ার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে রাখবেন। যাতে আপনি
নতুন নতুন প্রয়োজনীয় পোস্ট পেয়ে উপকৃত হতে পারেন। এতক্ষণ অডিয়েন্স আইটির সাথে
থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url